জাতীয় ফুটবল দল এএফসি এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বে এক কঠিন পরীক্ষার মুখোমুখি। আগামী ১৮ নভেম্বর শক্তিশালী ভারতের মুখোমুখি হবে লাল-সবুজ জার্সিধারীরা। এই ম্যাচটি বাংলাদেশের জন্য শুধু একটি ফুটবল ম্যাচ নয়, বরং বাছাইপর্বে টিকে থাকার এবং আন্তর্জাতিক ফুটবলে নিজেদের জয়হীন ধারা ভাঙার এক অগ্নিপরীক্ষা। সাম্প্রতিক সময়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আশানুরূপ ফল না পাওয়ায় দল ও সমর্থকদের মধ্যে কিছুটা হতাশা থাকলেও, ঘরের মাঠে ভারতের বিপক্ষে একটি ভালো ফলাফল অর্জনে পুরো দল বদ্ধপরিকর। ফুটবল বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই ম্যাচটি বাংলাদেশের ফুটবলের ভবিষ্যৎ নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
ভারতের বিপক্ষে ম্যাচের আগে বাংলাদেশ দল নিবিড় প্রস্তুতি চালিয়েছে। কোচিং স্টাফের তত্ত্বাবধানে খেলোয়াড়রা কৌশল ও শারীরিক সক্ষমতা বৃদ্ধিতে মনোযোগ দিয়েছেন। দলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় শমিত সোম এই ম্যাচ নিয়ে বেশ আশাবাদী। তিনি বিশ্বাস করেন, দল সম্মিলিতভাবে খেলে নিজেদের সেরাটা দিতে পারলে ভারতের বিপক্ষে জয় তুলে নেওয়া সম্ভব। ইনজুরি কাটিয়ে দলের মূল খেলোয়াড়দের ফিরে আসাও দলের আত্মবিশ্বাস বাড়িয়েছে। খেলোয়াড়রা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ যে, ঘরের মাঠে দর্শকদের সমর্থন নিয়ে তারা একটি ইতিবাচক ফল অর্জন করতে সক্ষম হবেন, যা দেশের ফুটবলের জন্য নতুন প্রেরণা যোগাবে।
বাংলাদেশ দলের মধ্যমাঠের প্রাণভোমরা হামজা চৌধুরীকে ঘিরেই ভারতের বিপক্ষে দলের কৌশল সাজানো হচ্ছে। তার মাঠের নেতৃত্ব, বল নিয়ন্ত্রণ এবং আক্রমণ ও রক্ষণে সমান অবদান দলের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রথম আলোর সূত্র অনুযায়ী, হামজা চৌধুরীকে কেন্দ্র করে এক বিশেষ পরিকল্পনা তৈরি করা হয়েছে, যাতে তিনি ভারতের রক্ষণভাগে চাপ সৃষ্টি করতে পারেন। ভারতের শক্তিশালী আক্রমণভাগকে রুখতে রক্ষণভাগকেও সুসংগঠিত রাখা হচ্ছে। কোচিং স্টাফরা ভারতের খেলার ধরন বিশ্লেষণ করে পাল্টা আক্রমণের সুযোগ তৈরি করার চেষ্টা করছেন। দলের প্রতিটি খেলোয়াড়কে তাদের নির্দিষ্ট দায়িত্ব সম্পর্কে অবগত করা হয়েছে এবং মাঠে সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে।
বাংলাদেশ ও ভারতের ফুটবল ম্যাচের এক দীর্ঘ ও ঐতিহাসিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা রয়েছে। যুগান্তর পত্রিকার প্রতিবেদন অনুযায়ী, উভয় দেশের সমর্থকরাই এই ম্যাচকে ঘিরে ভীষণ আবেগপ্রবণ থাকেন। ভারতের বিপক্ষে জয় বা অন্তত একটি ড্র বাছাইপর্বে বাংলাদেশের টিকে থাকার সম্ভাবনাকে উজ্জ্বল করবে। এটি শুধু পয়েন্ট টেবিলে উন্নতি নয়, বরং খেলোয়াড়দের আত্মবিশ্বাস ও দেশের ফুটবল অঙ্গনে এক নতুন উদ্দীপনা সৃষ্টি করবে। এই ম্যাচটি প্রমাণ করবে যে, আন্তর্জাতিক ফুটবলে নিজেদের অবস্থান সুদৃঢ় করতে বাংলাদেশ দল কতটা প্রস্তুত। দেশের ফুটবলপ্রেমীরা অধীর আগ্রহে এই গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের জন্য অপেক্ষা করছেন।