দক্ষিণ আমেরিকার দেশ ইকুয়েডরের একটি কারাগারে এক ভয়াবহ সশস্ত্র দাঙ্গায় অন্তত ২৭ জন বন্দীর শ্বাসরোধে মৃত্যু হয়েছে। গত রবিবার বিকেলে এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। কারাগারে বন্দীদের দুটি গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হলে দ্রুত তা সহিংস রূপ নেয়। পরিস্থিতি এতটাই নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায় যে, একপর্যায়ে কারাগারের ভেতরে ব্যাপক বিশৃঙ্খলা ও ধোঁয়ার সৃষ্টি হয়। এর ফলস্বরূপ শ্বাসরুদ্ধ হয়ে এত প্রাণহানি ঘটে। প্রাথমিক তথ্যে জানা গেছে, এই দাঙ্গায় শ্বাসরোধে নিহতদের পাশাপাশি সশস্ত্র সংঘর্ষে আরও চারজন বন্দী প্রাণ হারান, যা মোট মৃতের সংখ্যা ৩১-এ পৌঁছে দিয়েছে।
দাঙ্গার খবর পেয়ে নিরাপত্তা বাহিনী দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছালেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে তাদের বেশ বেগ পেতে হয়। কারাগারের অভ্যন্তরে বন্দীরা একে অপরের ওপর হামলা চালায়, আগুন ধরিয়ে দেয় এবং বিভিন্ন স্থানে প্রতিরোধ গড়ে তোলে। এতে কারাগারের পরিবেশ আরও বিষাক্ত হয়ে ওঠে এবং বহু বন্দী শ্বাসকষ্টে ভুগতে শুরু করে। কর্তৃপক্ষের মতে, কারাবন্দীদের মধ্যে ক্ষমতার লড়াই এবং মাদক চোরাচালানকে কেন্দ্র করে প্রায়শই এমন সহিংসতা দেখা যায়। এই ঘটনা ইকুয়েডরের কারাগারগুলোতে বিদ্যমান গভীর সংকট এবং নিরাপত্তাহীনতার চিত্র আবারও সামনে এনেছে।
ঘটনার পর ইকুয়েডরের কারা কর্তৃপক্ষ এবং পুলিশ দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করে। তারা নিহত বন্দীদের মৃতদেহ উদ্ধার করে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এই বিষয়ে বাংলাদেশের জনপ্রিয় দৈনিক 'ডেইলি স্টার'-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কর্তৃপক্ষ মৃতদেহগুলি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে এবং ঘটনার বিস্তারিত তদন্ত শুরু করেছে। দাঙ্গার পেছনে কারা জড়িত ছিল এবং কীভাবে এত বড় আকারের সহিংসতা ঘটানো সম্ভব হলো, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
ইকুয়েডরের কারাগারগুলোতে সহিংসতা এবং দাঙ্গা নতুন কোনো ঘটনা নয়। গত কয়েক বছর ধরে দেশটিতে কারাগারকেন্দ্রিক সহিংসতা একটি বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রায়শই অতিরিক্ত ভিড়, দুর্বল নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং মাদক কারবারী চক্রের প্রভাবের কারণে কারাগারগুলি দাঙ্গার কেন্দ্রে পরিণত হয়। এই ধরনের ঘটনায় শত শত বন্দীর প্রাণহানি হয়েছে অতীতেও। বর্তমান ঘটনাটি আবারও প্রমাণ করে যে, ইকুয়েডরের কারাগার ব্যবস্থার সংস্কার ও নিরাপত্তা জোরদার করা অত্যন্ত জরুরি, অন্যথায় এমন মর্মান্তিক ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধ করা কঠিন হবে।