বাংলাদেশের অর্থনীতি: রিজার্ভ বৃদ্ধি ও আইএমএফের পর্যবেক্ষণ

বাংলাদেশের অর্থনীতি: রিজার্ভ বৃদ্ধি ও আইএমএফের পর্যবেক্ষণ

দেশের অর্থনীতিতে নতুন আশার সঞ্চার

সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে এক নতুন আশার সঞ্চার হয়েছে। সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা দাবি করছেন যে, দেশের অর্থনীতি সকল প্রধান সূচকে ইতিবাচক ধারায় ফিরে এসেছে, যার মধ্যে রপ্তানি ও বৈদেশিক বিনিয়োগ বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি আবারও ইতিবাচক ধারায় ফিরেছে বলে বিভিন্ন প্রতিবেদনে উঠে আসছে। এই ইতিবাচক প্রবণতা দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির দিকে নিবিড়ভাবে নজর রাখছে এবং তাদের পর্যালোচনাগুলো আগামী দিনে দেশের অর্থনৈতিক নীতি নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এই ইতিবাচক ধারা বজায় থাকলে দীর্ঘমেয়াদী অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন সম্ভব বলে অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন, যা দেশের উন্নয়ন যাত্রায় নতুন গতি আনবে।

বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের লক্ষ্য

দেশের অর্থনীতির স্থিতিশীলতা রক্ষায় বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য। বাংলাদেশ ব্যাংক ২০২৬ সালের জুনের মধ্যে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ প্রায় ৪০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করার একটি সুনির্দিষ্ট অর্থনৈতিক লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। এই উচ্চাভিলাষী লক্ষ্য অর্জিত হলে তা দেশের অর্থনীতিকে আরও শক্তিশালী করবে এবং আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলাদেশের আর্থিক সক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে, এমনটি বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে উঠে এসেছে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের স্থিতিশীলতা আমদানি ব্যয় মেটানো, বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ এবং মুদ্রার মান ধরে রাখার জন্য অপরিহার্য। এই লক্ষ্য পূরণে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিভিন্ন নীতিগত পদক্ষেপ গ্রহণ করছে, যা দেশের অর্থনৈতিক কাঠামোকে দীর্ঘমেয়াদী সুরক্ষা দেবে বলে আশা করা হচ্ছে।

আইএমএফের পর্যবেক্ষণ ও ভবিষ্যৎ ঋণ পর্যালোচনা

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) বাংলাদেশের অর্থনীতির ওপর নিবিড় পর্যবেক্ষণ অব্যাহত রেখেছে। তাদের সর্বশেষ পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২০২৫ অর্থবছরে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কমে ৩.৭ শতাংশে দাঁড়াতে পারে, যা ২০২৪ অর্থবছরের ৪.২ শতাংশের তুলনায় কিছুটা কম। এই পরিস্থিতি সত্ত্বেও, আইএমএফ বাংলাদেশের পরবর্তী নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে ঋণ পর্যালোচনা চূড়ান্ত করার আগে বিস্তারিত আলোচনা করবে বলে জানা গেছে। এই আলোচনা বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সংস্কার এবং ভবিষ্যৎ ঋণের শর্তাবলী নির্ধারণে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। আইএমএফের এই সম্পৃক্ততা দেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে সহায়ক হবে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন, যা প্রথম আলো সহ বিভিন্ন সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়েছে।

অর্থনীতির অন্যান্য ইতিবাচক দিক ও চ্যালেঞ্জ

অর্থনীতির সার্বিক ইতিবাচক ধারায় রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয় একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে ঢাকা ও চট্টগ্রাম অঞ্চল দেশের মোট রেমিট্যান্সের প্রায় চার-পঞ্চমাংশ আকর্ষণ করেছে, যা অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে সহায়ক হচ্ছে। একইসাথে, সরকার শ্রম আইন প্রয়োগে জোর দিচ্ছে, যা শ্রমিকদের অধিকার সুরক্ষা এবং কর্মপরিবেশ উন্নয়নে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে আশা করা হচ্ছে। দেশের অর্থনীতি সামগ্রিকভাবে ইতিবাচক গতিপথে ফিরে এসেছে বলে সরকার দাবি করলেও, বিশ্ব অর্থনীতির অস্থিরতা এবং অভ্যন্তরীণ চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলায় সতর্ক থাকতে হবে। মানবজমিন সহ অন্যান্য সংবাদপত্রের প্রতিবেদনে এই বিষয়গুলো উঠে এসেছে, যা দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য জরুরি।

Share this article:

সর্বশেষ খবর