দেশের ব্যাংকিং খাতে এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংক সম্প্রতি পাঁচটি দুর্বল ইসলামী ব্যাংককে একীভূত করে গঠিত 'সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংক পিএলসি'কে চূড়ান্ত লাইসেন্স প্রদান করেছে। এই নতুন ব্যাংকটি দেশের আর্থিক স্থিতিশীলতা রক্ষায় এবং দুর্বল ব্যাংকগুলোর সক্ষমতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে আশা করা হচ্ছে। এই একীভূতকরণের মাধ্যমে ব্যাংকগুলো তাদের সম্পদ ও দায়বদ্ধতা একত্রিত করবে, যা তাদের পরিচালন ক্ষমতাকে শক্তিশালী করবে এবং গ্রাহকদের আস্থা অর্জনে সহায়ক হবে। দ্য ডেইলি স্টার পত্রিকা সূত্রে জানা গেছে, এই প্রক্রিয়াটি দেশের আর্থিক ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বৃদ্ধিতেও অবদান রাখবে।
দীর্ঘদিন ধরে দেশের কয়েকটি ইসলামী ব্যাংক আর্থিক দুর্বলতা, খেলাপি ঋণ বৃদ্ধি এবং তারল্য সংকটের মতো চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছিল। এসব ব্যাংকের পরিস্থিতি সামগ্রিক ব্যাংকিং খাতের জন্য উদ্বেগজনক হয়ে উঠছিল। এমন পরিস্থিতিতে, বাংলাদেশ ব্যাংক দুর্বল ব্যাংকগুলোকে একীভূত করার নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। এর মূল উদ্দেশ্য ছিল ব্যাংকগুলোর আর্থিক ভিত্তিকে শক্তিশালী করা, গ্রাহকদের আমানতের সুরক্ষা নিশ্চিত করা এবং ব্যাংকিং খাতের শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা। এই একীভূতকরণ প্রক্রিয়া শুধু দুর্বল ব্যাংকগুলোর জন্যই নয়, বরং সমগ্র আর্থিক ব্যবস্থার স্থিতিশীলতার জন্যও অত্যন্ত জরুরি ছিল।
পাঁচটি ব্যাংকের একীভূতকরণ নিঃসন্দেহে দেশের ব্যাংকিং খাতে সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলবে। এর ফলে সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংক পিএলসি একটি বৃহত্তর আর্থিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে আবির্ভূত হবে, যা বৃহৎ প্রকল্পগুলোতে অর্থায়ন এবং গ্রাহকদের উন্নত সেবা প্রদানে সক্ষম হবে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই পদক্ষেপ অন্যান্য দুর্বল ব্যাংকগুলোর জন্যও একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে এবং ভবিষ্যতে আরও একীভূতকরণের পথ প্রশস্ত করতে পারে। গ্রাহকদের জন্য এটি একটি ইতিবাচক খবর, কারণ তাদের আমানতের নিরাপত্তা আরও সুদৃঢ় হবে এবং তারা একটি শক্তিশালী ও স্থিতিশীল আর্থিক প্রতিষ্ঠানের অধীনে সেবা গ্রহণের সুযোগ পাবে। যুগান্তর পত্রিকার প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই ধরনের পদক্ষেপ আর্থিক খাতের সামগ্রিক সক্ষমতা বাড়াতে অপরিহার্য।