সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের স্টার্টআপ পরিবেশ দ্রুত গতিতে বিকশিত হচ্ছে, যা আন্তর্জাতিক মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে। দেশীয় উদ্ভাবনী প্রতিষ্ঠানগুলো বিভিন্ন খাতে যুগান্তকারী সমাধান নিয়ে আসছে, যা কেবল স্থানীয় বাজারেই নয়, বিশ্ব মঞ্চেও নিজেদের সক্ষমতা প্রমাণ করছে। উদাহরণস্বরূপ, ইলেকট্রিক গাড়ির জন্য ব্যাটারি বদলের প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করা টাইগার নিউ এনার্জি এবং কৃষি-প্রযুক্তি মাধ্যম আইফার্মার আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ তৈরি করেছে। দ্য ডেইলি স্টার পত্রিকার এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, এমন স্টার্টআপগুলোর উত্থান দেশের প্রযুক্তি খাতে নতুন উদ্দীপনা তৈরি করেছে এবং আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ প্রবাহকেও উৎসাহিত করেছে। এই সাফল্য বাংলাদেশের তরুণ উদ্যোক্তাদের উদ্ভাবনী শক্তি এবং বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় তাদের প্রস্তুতিরই প্রমাণ।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং সেমিকন্ডাক্টর শিল্প বাংলাদেশের জন্য নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিচ্ছে। সরকার ও বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, বাংলাদেশ মুক্ত পেশা ও পোশাক শিল্পের মতো খাতগুলোতে যেমন বিশ্বব্যাপী নিজেদের অবস্থান তৈরি করেছে, তেমনি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা গবেষণা ও উন্নয়নে বিনিয়োগ এবং সেমিকন্ডাক্টর শিল্পে প্রবেশ করে একটি শক্তিশালী বৈশ্বিক খেলোয়াড় হিসেবে আবির্ভূত হতে পারে। যুগান্তর পত্রিকার খবর অনুযায়ী, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা উদ্ভাবনে নেতৃত্ব দিতে হলে অত্যাধুনিক সরঞ্জাম, উচ্চমানের মানবসম্পদ এবং নিরবচ্ছিন্ন গবেষণায় উল্লেখযোগ্য বিনিয়োগ অত্যাবশ্যক। সেমিকন্ডাক্টর শিল্পে প্রবেশের মাধ্যমে বাংলাদেশ কেবল উচ্চ-প্রযুক্তি খাতে নিজেদের সক্ষমতা বাড়াবে না, বরং অর্থনীতিতে নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও রপ্তানি আয় বৃদ্ধিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
বাংলাদেশের প্রযুক্তি খাতের এই অগ্রযাত্রাকে আরও বেগবান করতে বিভিন্ন প্রদর্শনী ও মেলার আয়োজন করা হচ্ছে। আগামী ৮ থেকে ১৩ ডিসেম্বর ঢাকার আগারগাঁওয়ে আইডিবি ভবনে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে সিটি আইটি মেগা ফেয়ার ২০২৫। মানবজমিন পত্রিকার তথ্য অনুযায়ী, এই ধরনের মেলা প্রযুক্তিপ্রেমী, উদ্যোক্তা, বিনিয়োগকারী এবং শিক্ষার্থীদের জন্য একটি দারুণ মঞ্চ তৈরি করে, যেখানে তারা সর্বশেষ প্রযুক্তি সম্পর্কে জানতে পারে, নতুন উদ্ভাবন প্রদর্শন করতে পারে এবং যোগাযোগ স্থাপনের সুযোগ পায়। এমন আয়োজনগুলো দেশের প্রযুক্তি পরিবেশকে শক্তিশালী করতে, নতুন বিনিয়োগ আকর্ষণ করতে এবং স্থানীয় উদ্ভাবকদের বিশ্ব মঞ্চে পরিচিতি লাভে সহায়তা করে। আধুনিক প্রযুক্তি, দক্ষ জনবল এবং নিরন্তর উদ্ভাবনের সমন্বয়েই বাংলাদেশের প্রযুক্তি খাত দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে।