সম্প্রতি বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে অস্থিরতা বেড়েছে, যার প্রতিফলন সহিংস ঘটনায় দেখা গেছে। লক্ষ্মীপুরে স্থানীয় এক বিএনপি নেতাকে গুলি ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এই ঘটনা স্থানীয় রাজনীতিতে তীব্র উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তৈরি করেছে। একই দিনে, রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন স্থানে, বিশেষ করে বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশন এলাকায়, একাধিক হাতে তৈরি বোমা বিস্ফোরণের খবর পাওয়া গেছে। দ্য ডেইলি স্টার সূত্রে জানা গেছে, এই বোমা হামলাগুলো জনমনে আতঙ্ক ছড়িয়েছে এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে উচ্চ সতর্কতায় রেখেছে। এসব ঘটনা আসন্ন নির্বাচনের আগে দেশের সার্বিক নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।
রাজনৈতিক অস্থিরতার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো প্রধান বিরোধী দল বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দল। দলের আসন্ন নির্বাচনের মনোনয়ন তালিকা প্রকাশ হওয়ার পর থেকে সারাদেশে তীব্র অসন্তোষ ও বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। বিভিন্ন জেলা থেকে খবর পাওয়া যাচ্ছে যে, তৃণমূলের কর্মীরা তাদের পছন্দের প্রার্থীর বদলে 'দুর্বল' বা 'অপরিচিত' প্রার্থীদের মনোনয়ন দেওয়ায় আপত্তি জানিয়ে প্রতিবাদ করছেন। প্রথম আলোর প্রতিবেদন অনুযায়ী, দুই ডজনেরও বেশি জেলায় এই ধরনের বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে, যেখানে কর্মীরা টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ ও মিছিল করেছেন। এই অভ্যন্তরীণ কোন্দল দলের ঐক্যকে দুর্বল করছে এবং সামগ্রিক রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে আরও অস্থিতিশীল করে তুলছে বলে পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন।
লক্ষ্মীপুরে রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড, ঢাকায় বোমা হামলা এবং বিএনপির অভ্যন্তরীণ বিক্ষোভ – এই সবগুলো ঘটনা একত্রিত হয়ে দেশের বর্তমান রাজনৈতিক অস্থিরতার একটি স্পষ্ট চিত্র তুলে ধরছে। এই ধরনের সহিংসতা ও রাজনৈতিক বিভেদ জনজীবনে ব্যাপক প্রভাব ফেলছে। সাধারণ মানুষ নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন এবং রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার অভাব তাদের দৈনন্দিন জীবনে অনিশ্চয়তা তৈরি করছে। অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডেও এর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। সরকার ও বিরোধী দল উভয়ের প্রতিই জনগণের প্রত্যাশা, তারা যেন সংঘাতের পথ পরিহার করে শান্তিপূর্ণ সমাধানের দিকে এগিয়ে আসে এবং দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে সুসংহত করে।