আফ্রিকার সুদানে কর্তব্যরত জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে এক ভয়াবহ ড্রোন হামলায় ছয়জন বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী নিহত এবং আটজন আহত হয়েছেন। সুদানের সাউথ কর্ডোফান প্রদেশের একটি জাতিসংঘ ঘাঁটিতে এই হামলা ঘটে, যা বিশ্বজুড়ে নিন্দার ঝড় তুলেছে। নিহত শান্তিরক্ষীরা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর গর্বিত সদস্য ছিলেন। তাঁরা জাতিসংঘের ব্যানারে বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছিলেন। প্রথম আলো ও মানবজমিনসহ দেশের শীর্ষস্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো গভীর উদ্বেগের সঙ্গে এই খবর প্রকাশ করেছে, যা দেশজুড়ে শোকের ছায়া ফেলেছে। আহতদের দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে এবং তাদের অবস্থা নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।
এই ন্যাক্কারজনক হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বাংলাদেশ এই কাপুরুষোচিত হামলার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে এবং দোষীদের দ্রুত চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছে। একই সঙ্গে, জাতিসংঘও এই হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। জাতিসংঘের মহাসচিব এক বিবৃতিতে নিহত শান্তিরক্ষীদের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন এবং আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেছেন। বিবিসি বাংলা ও দ্য ডেইলি স্টারসহ আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলোও জাতিসংঘের এই অবস্থানকে গুরুত্বের সঙ্গে তুলে ধরেছে, যা শান্তিরক্ষীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার বৈশ্বিক অঙ্গীকারের প্রতিফলন।
জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশ দীর্ঘকাল ধরে বিশ্বের অন্যতম প্রধান অবদানকারী দেশ হিসেবে সুপরিচিত। বাংলাদেশের অকুতোভয় শান্তিরক্ষীরা বিশ্বের বিভিন্ন সংঘাতপূর্ণ অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে নিজেদের জীবন বাজি রেখে কাজ করে চলেছেন। সুদানে ঘটে যাওয়া এই হামলা আবারও প্রমাণ করল যে, শান্তিরক্ষা মিশনে নিয়োজিত সেনারা কতটা ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশে কাজ করেন। দেশ ও বিশ্ব শান্তির জন্য বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের এই আত্মত্যাগ চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। সরকার নিহতদের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছে এবং আহতদের সম্ভাব্য সব ধরনের সহায়তা প্রদানের অঙ্গীকার করেছে। এই ঘটনা বিশ্বব্যাপী শান্তিরক্ষীদের নিরাপত্তার বিষয়টি নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।