গতকাল সকালে ৫.৭ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে রাজধানী ঢাকা সহ দেশের বিভিন্ন অংশ। এই আকস্মিক প্রাকৃতিক দুর্যোগে অন্তত ১০ জন নিহত এবং শতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, নিহতদের মধ্যে শিশুও রয়েছে। ভূমিকম্পটি শুক্রবার সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটে অনুভূত হয় এবং এর উৎপত্তিস্থল ছিল বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে। দ্য ডেইলি স্টার সূত্রে জানা গেছে, ভূমিকম্পের তীব্রতা এতটাই ছিল যে, অনেক পুরনো ভবনের ছাদ বা দেয়ালের পলেস্তারা খসে পথচারীদের ওপর পড়ে হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। আতঙ্কে মানুষজন দ্রুত ভবন থেকে বেরিয়ে খোলা জায়গায় আশ্রয় নেয়, ফলে রাস্তাঘাটে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
ভূমিকম্পের আকস্মিকতা জনমনে তীব্র আতঙ্ক সৃষ্টি করে। বিশেষ করে উঁচু ভবনের বাসিন্দারা দ্রুত সিঁড়ি বেয়ে নিচে নামতে শুরু করেন। অনেককে ভীতসন্ত্রস্ত অবস্থায় রাস্তাঘাটে ছোটাছুটি করতে দেখা যায়। হাসপাতালগুলোতে আহতদের ভিড় বাড়তে থাকে, যেখানে জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হয়। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স কর্মীরা উদ্ধার তৎপরতা শুরু করে এবং বিভিন্ন স্থান থেকে ক্ষয়ক্ষতির খবর সংগ্রহ করে। যদিও বড় ধরনের অবকাঠামোগত ক্ষতির খবর তাৎক্ষণিকভাবে পাওয়া যায়নি, তবে পুরনো ও দুর্বল ভবনগুলো ঝুঁকির মুখে পড়েছে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। এই প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেশের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার সক্ষমতা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে।
বিশেষজ্ঞরা দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের ভূমিকম্প ঝুঁকির বিষয়ে সতর্ক করে আসছেন, যা বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমেও উঠে এসেছে। বাংলাদেশ ভারতীয় ও ইউরেশীয় টেকটোনিক প্লেটের সংযোগস্থলে অবস্থিত হওয়ায় এটি ভূমিকম্পপ্রবণ অঞ্চলের অন্তর্ভুক্ত। গতকাল অনুভূত ৫.৭ মাত্রার ভূমিকম্পটি সেই আশঙ্কারই একটি প্রতিচ্ছবি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঢাকা শহরে অপরিকল্পিত নগরায়ণ এবং ভূমিকম্প সহনশীল ভবন নির্মাণের অভাব বড় ধরনের বিপর্যয়ের কারণ হতে পারে। ভবিষ্যতে আরও শক্তিশালী ভূমিকম্পের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। তাই এখন থেকেই জনসচেতনতা বৃদ্ধি, ভবন নির্মাণে কঠোর নীতিমালা অনুসরণ এবং জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুতি জোরদার করা অত্যন্ত জরুরি বলে সংশ্লিষ্ট মহল মনে করছে।