ভারতের প্রতিবাদ: বাংলাদেশের সংখ্যালঘু নির্যাতন ও মাহফুজ আলমের বিতর্কিত পোস্ট

ভারতের প্রতিবাদ: বাংলাদেশের সংখ্যালঘু নির্যাতন ও মাহফুজ আলমের বিতর্কিত পোস্ট

২১ ডিসেম্বর ২০২৪: ভারত সম্প্রতি বাংলাদেশের সংখ্যালঘু নির্যাতন এবং মাহফুজ আলমের বিতর্কিত ফেসবুক পোস্টের বিষয়টি নিয়ে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছে। ভারতের সংসদে সম্প্রতি বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর সহিংসতার পরিসংখ্যান পেশ করা হয়েছে এবং ওই পরিসংখ্যানের ভিত্তিতে ভারতীয় গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হওয়ায় বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা তা বিভ্রান্তিকর এবং অতিরঞ্জিত হিসেবে উল্লেখ করেছেন। পাশাপাশি, মাহফুজ আলমের বিতর্কিত পোস্টের বিরুদ্ধে ভারতের পক্ষ থেকে "কড়া প্রতিবাদ" জানানো হয়েছে। 


সংখ্যালঘু নির্যাতনের পরিসংখ্যান: ভারতীয় সংসদে বিতর্ক


ভারতের সংসদে ২০ ডিসেম্বর, ২০২৪ তারিখে এক প্রশ্নোত্তর পর্বে ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কীর্তি বর্ধন সিং জানিয়ে দেন, ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর ২২০০টি সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। এ পরিসংখ্যানটি তুলনা করা হয়েছে পাকিস্তানেও একই সময়কালে ঘটিত সহিংসতার পরিসংখ্যানের সাথে। 


ভারতের পক্ষ থেকে এই পরিসংখ্যান প্রদর্শিত হওয়ায় বাংলাদেশ সরকারের তরফে তা অস্বীকার করা হয় এবং একে বিভ্রান্তিকর হিসেবে উল্লেখ করা হয়। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানায়, ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত দেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সহিংসতার সংখ্যা ছিল ১৩৮টি, যার মধ্যে ৩৬৮টি বাড়িঘরে হামলা এবং ৮২ জন আহত হয়েছেন।


মাহফুজ আলমের বিতর্কিত পোস্ট: ভারতীয় সরকারের প্রতিক্রিয়া


বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম ১৬ ডিসেম্বর তার ফেসবুক পোস্টে বাংলাদেশের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গ এবং উত্তর-পূর্ব ভারতের কিছু রাজ্যকে যুক্ত করে একটি মানচিত্র শেয়ার করেছিলেন। যদিও পরে তিনি ওই পোস্টটি মুছে ফেলেন, কিন্তু ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিষয়টি নিয়ে কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছে। 


ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেছেন, "একজন সিনিয়র বাংলাদেশি নেতার মন্তব্য নিয়ে আমরা বাংলাদেশ সরকারের কাছে কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছি। জনসমক্ষে মন্তব্য করার সময় সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে, বিশেষ করে যখন ভারত বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন করতে আগ্রহী।"


বাংলাদেশের অবস্থান


বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের তরফে প্রতিটি সহিংসতার ঘটনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে এবং দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। তারা অভিযোগ করেছে যে, বেশিরভাগ সহিংসতার ঘটনা রাজনৈতিক কারণে ঘটেছে এবং তা সরকারের কোনো দৃষ্টিভঙ্গির অংশ নয়।



বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে সম্পর্কের এই নতুন উত্তেজনা রাজনৈতিক ও সামাজিক বিষয়গুলির পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সম্পর্কেও প্রভাব ফেলতে পারে। যেখানে বাংলাদেশ সরকার সহিংসতার ঘটনা তদন্ত করছে এবং দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, সেখানে ভারত সরকারের পক্ষ থেকে উদ্বেগ প্রকাশ করা হচ্ছে। ভারতের বিশেষভাবে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা এবং কল্যাণ নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের কাছে আশ্বাস চাওয়া হচ্ছে, যাতে ভবিষ্যতে এই ধরনের সহিংসতার ঘটনা কমিয়ে আনা যায়।


ভারতের প্রতিবাদ: বাংলাদেশের সংখ্যালঘু নির্যাতন ও মাহফুজ আলমের বিতর্কিত পোস্ট

ভারতের প্রতিবাদ: বাংলাদেশের সংখ্যালঘু নির্যাতন ও মাহফুজ আলমের বিতর্কিত পোস্ট

Share this article:

সর্বাধিক পঠিত

সর্বশেষ খবর