আজ শুক্রবার ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মধ্যে এক গুরুত্বপূর্ণ শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এই বৈঠক দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান কৌশলগত সম্পর্ককে আরও সুদৃঢ় করার পাশাপাশি দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বৃদ্ধিতে নতুন গতি আনবে বলে আশা করা হচ্ছে। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই সম্মেলন এমন এক সময়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে যখন আন্তর্জাতিক ভূ-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে দ্রুত পরিবর্তন আসছে এবং রাশিয়া এশীয় দেশগুলির সাথে তাদের সম্পর্ক জোরদার করতে আগ্রহী। ভারতের জন্য এটি একটি ভারসাম্যপূর্ণ কূটনীতির অংশ, যেখানে তারা ঐতিহ্যবাহী মিত্র রাশিয়ার সাথে সম্পর্ক বজায় রেখে চলেছে।
এই শীর্ষ সম্মেলনের মূল আলোচ্যসূচিগুলির মধ্যে অন্যতম হলো দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা বৃদ্ধি। জ্বালানি, প্রতিরক্ষা, প্রযুক্তি এবং কৃষি খাতে নতুন বিনিয়োগ ও চুক্তি স্বাক্ষরের সম্ভাবনা রয়েছে। রাশিয়া ভারতের অন্যতম প্রধান জ্বালানি সরবরাহকারী এবং সামরিক সরঞ্জামের উৎস। উভয় দেশই দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়াতে আগ্রহী। বিশেষ করে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার মুখে রাশিয়া নতুন বাজার খুঁজছে এবং ভারত তাদের পণ্যের জন্য একটি বড় বাজার হতে পারে। এই বৈঠকে উভয় পক্ষই বাণিজ্য সহজীকরণ এবং নতুন অর্থনৈতিক করিডর তৈরির বিষয়ে আলোচনা করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
পুতিন-মোদির এই বৈঠক শুধু দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নয়, বরং বৃহত্তর আঞ্চলিক ভূ-রাজনীতিতেও গভীর প্রভাব ফেলবে। ইউক্রেন সংঘাতের পর পশ্চিমা দেশগুলির সাথে রাশিয়ার সম্পর্কে টানাপোড়েন দেখা দিয়েছে, এমন পরিস্থিতিতে ভারতের সাথে রাশিয়ার সম্পর্ক মস্কোর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অন্যদিকে, ভারত বৈশ্বিক মঞ্চে নিজেদের প্রভাব বাড়াতে চাইছে এবং বিভিন্ন বৃহৎ শক্তির সাথে ভারসাম্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখছে। একটি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই সম্মেলন এশীয় দেশগুলির জন্য একটি বার্তা বহন করে যে, বহুপাক্ষিক সম্পর্ক এবং স্বাধীন পররাষ্ট্রনীতি অনুসরণ করা সম্ভব। এই বৈঠক দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দেবে, কারণ ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে যেকোনো শক্তিশালী সম্পর্ক এই অঞ্চলের গতিপথকে প্রভাবিত করতে পারে।