বর্তমান বিশ্বে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তির এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। ওপেনএআই-এর চ্যাটজিপিটি-এর মতো শক্তিশালী মডেলগুলোর পাশাপাশি চীনের ডিপসিক এআই-এর মতো নতুন স্টার্টআপগুলো বিশ্বজুড়ে দ্রুত জনপ্রিয়তা লাভ করছে। এই নতুন এআই সংস্থাগুলো তাদের উদ্ভাবনী সমাধান দিয়ে প্রযুক্তি বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিচ্ছে। আলিবাবার মতো বৃহৎ প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোও বিনামূল্যে এআই চ্যাটবট চালু করে এই প্রতিযোগিতায় যোগ দিয়েছে, যা এআই প্রযুক্তির সহজলভ্যতা এবং ব্যবহারের পরিধি আরও বাড়িয়ে তুলছে। এই দ্রুত উদ্ভাবন বৈশ্বিক প্রযুক্তি বাজারে এক নতুন গতি এনেছে এবং প্রতিনিয়ত নতুন নতুন অ্যাপ্লিকেশন ও পরিষেবার জন্ম দিচ্ছে।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যাপক ব্যবহার, বিশেষ করে এর জটিল মডেলগুলো চালানোর জন্য প্রচুর পরিমাণে বিদ্যুৎ খরচ হয়, যা পরিবেশের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। এই এআই-চালিত নির্গমন কমাতে বিশ্বের বড় বড় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো এখন উচ্চ-মানের কার্বন অপসারণ ক্রেডিটের সন্ধানে রয়েছে। বিবিসি বাংলার এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে যে, এই ক্রমবর্ধমান চাহিদা কার্বন অপসারণ ক্রেডিট সরবরাহে ঘাটতি তৈরি করছে। এআই-এর পরিবেশগত পদচিহ্ন কমানোর জন্য নতুন প্রযুক্তি এবং নীতিগত সমাধানের প্রয়োজনীয়তা এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এটি কেবল পরিবেশগত চ্যালেঞ্জই নয়, বরং প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর জন্য একটি অর্থনৈতিক ও নৈতিক দায়িত্বও বটে।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার দ্রুত প্রসারের সাথে সাথে এর নিয়ন্ত্রণ ও ডেটা গোপনীয়তা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) এআই এবং ডেটা গোপনীয়তা বিধিমালা সংস্কারের জন্য নতুন পরিকল্পনা ঘোষণা করতে যাচ্ছে। ইউরোপীয় ও মার্কিন কোম্পানিগুলোর পক্ষ থেকে চাপের মুখে এই পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। এই নিয়ন্ত্রণমূলক পরিবর্তনগুলো বিশ্বব্যাপী এআই প্রযুক্তির ব্যবহার এবং বিকাশের ওপর গভীর প্রভাব ফেলবে। প্রথম আলোর এক সাম্প্রতিক বিশ্লেষণেও এআই-এর নৈতিক ব্যবহার এবং এর সামাজিক প্রভাব নিয়ে আলোচনার গুরুত্ব তুলে ধরা হয়েছে। এআই-এর ক্ষমতাকে কাজে লাগানোর পাশাপাশি এর সম্ভাব্য অপব্যবহার রোধে কঠোর নীতি এবং স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা এখন বিশ্ব নেতাদের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ।