গত ১৮ ডিসেম্বর হাসনাত আব্দুল্লাহ ও তার সহযোগীরা সময় টেলিভিশনের বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান সিটি গ্রুপের চেয়ারম্যান মো. হাসানের সঙ্গে দেখা করেন। অভিযোগ রয়েছে, তারা চ্যানেলটির দশজন কর্মীর একটি তালিকা প্রদান করে তাদের চাকরিচ্যুত করার জন্য চাপ প্রয়োগ করেন।
চাকরিচ্যুত সাংবাদিকদের মধ্যে ছিলেন চিফ ইনপুট এডিটর ওমর ফারুক, চিফ আউটপুট এডিটর মো. আরিফুল সাজ্জাত, ডিজিটাল হেড কামাল শাহরিয়ার, সহযোগী বিশেষ প্রতিবেদক দেবাশীষ রায়, এবং সিনিয়র রিপোর্টার বুলবুল রেজা।
ওমর ফারুক বিবিসি বাংলাকে জানান, "তালিকায় থাকা কর্মীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে হুমকি দেওয়া হয়।"
তবে হাসনাত আব্দুল্লাহ অভিযোগ অস্বীকার করে দাবি করেছেন, "আমাদের উদ্দেশ্য ছিল শুধুমাত্র আলোচনা করা। কোনো ভয় দেখানো বা তালিকা দেওয়ার ঘটনা ঘটেনি।"
সিটি গ্রুপের চেয়ারম্যান মো. হাসান স্বীকার করেছেন যে হাসনাতের নেতৃত্বে একটি দল তার সঙ্গে দেখা করেছে এবং কয়েকজন কর্মীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করেছে। তবে চাকরিচ্যুত সাংবাদিকদের অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করে মিডিয়া লিমিটেডের চেয়ারম্যান মোরশেদুল ইসলাম জানান, "তাদের চাপের কারণে আমরা ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হয়েছি।"
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. সাইফুল আলম চৌধুরীর মতে, "গণমাধ্যমে মোবোক্রেসির মাধ্যমে হস্তক্ষেপের ঘটনা নতুন নয়। তবে সময় টেলিভিশনের ঘটনা এই প্রবণতার একটি স্পষ্ট উদাহরণ।"
রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার্সের তথ্যানুযায়ী, গণমাধ্যমের স্বাধীনতার তালিকায় বাংলাদেশ ১৮০ দেশের মধ্যে ১৬৫তম। এই অবস্থান সরকারের হস্তক্ষেপের দিকটি আরও স্পষ্ট করছে।
এ ঘটনায় গণমাধ্যমের স্বাধীনতার ওপর এক গভীর প্রশ্নচিহ্ন দেখা দিয়েছে। চাকরিচ্যুত সাংবাদিকদের পুনরায় নিয়োগের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সিটি গ্রুপের চেয়ারম্যান।
সময় টেলিভিশনে সাংবাদিক ছাঁটাই: অভিযোগের কেন্দ্রে হাসনাত আব্দুল্লাহ