ভুটানের প্রধানমন্ত্রীর ঢাকা সফর: দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদারের নতুন দিগন্ত

ভুটানের প্রধানমন্ত্রীর ঢাকা সফর: দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদারের নতুন দিগন্ত

আগমন ও উষ্ণ অভ্যর্থনা

ভুটানের প্রধানমন্ত্রী শেরিং তোবগে এক গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রীয় সফরে ঢাকায় পৌঁছেছেন। শনিবার সকালে তাঁকে বহনকারী বিশেষ বিমানটি ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। বিমানবন্দরে তাঁকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা। সামরিক বাহিনীর সুসজ্জিত দল সম্মানসূচক প্রহরা প্রদান করে এবং একুশবার তোপধ্বনি দেওয়া হয়, যা ছিল এই সফরের আনুষ্ঠানিকতার অংশ। এই সফরকে দুই বন্ধুপ্রতিম দেশের বিদ্যমান সুসম্পর্ক আরও সুদৃঢ় করার একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে। ভুটান বাংলাদেশের পরীক্ষিত বন্ধুরাষ্ট্র এবং স্বাধীনতার পর যে কয়েকটি দেশ বাংলাদেশকে প্রথম স্বীকৃতি দিয়েছিল, তাদের মধ্যে ভুটান অন্যতম। এই সফরের মাধ্যমে দুই দেশের কূটনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক নতুন মাত্রা পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ও আলোচনার আলোচ্যসূচি

প্রধানমন্ত্রীর এই সফরে বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যে একাধিক দ্বিপাক্ষিক বিষয়ে আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে। বাণিজ্য, জলবিদ্যুৎ, আঞ্চলিক সংযোগ এবং পর্যটন খাতের উন্নয়ন এই আলোচনার প্রধান আলোচ্যসূচি। উভয় দেশই দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সম্প্রসারণে আগ্রহী। বিশেষ করে, ভুটানের জলবিদ্যুৎ বাংলাদেশে আমদানির বিষয়টি দীর্ঘদিন ধরে আলোচনায় রয়েছে। এছাড়াও, ভুটানের শিক্ষার্থীরা বাংলাদেশে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করে এবং বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাতে ভুটানের জনগণের আস্থা রয়েছে। এই সফরকালে নতুন কিছু চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হতে পারে, যা উভয় দেশের অর্থনীতি ও জনগণের জন্য ইতিবাচক ফল বয়ে আনবে বলে আশা করা হচ্ছে। প্রথম আলোর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বহু বিষয়ে ফলপ্রসূ আলোচনা হতে পারে।

আঞ্চলিক সহযোগিতা ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা

শেরিং তোবগের এই সফর কেবল দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে নয়, বরং আঞ্চলিক সহযোগিতার ক্ষেত্রেও নতুন সম্ভাবনা উন্মোচন করবে। বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত ও নেপাল (বিবিআইএন)-এর মতো আঞ্চলিক জোটগুলোর মাধ্যমে সংযোগ বৃদ্ধির ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে। ভুটান ভারতের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে সরাসরি রেল ও সড়ক যোগাযোগ স্থাপনে আগ্রহী। এটি আঞ্চলিক বাণিজ্য ও পর্যটনকে ব্যাপকভাবে উৎসাহিত করবে। এই সফর দুই দেশের মধ্যে সাংস্কৃতিক বিনিময় এবং জনগণের সম্পর্ককে আরও গভীর করবে। মানবজমিনের তথ্য অনুযায়ী, এই সফরের মাধ্যমে ভুটানের সঙ্গে বাংলাদেশের কৌশলগত অংশীদারিত্ব আরও শক্তিশালী হবে, যা দক্ষিণ এশিয়ার শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্যও ইতিবাচক বার্তা বহন করবে। ভবিষ্যতে উভয় দেশই একে অপরের উন্নয়ন যাত্রায় গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হিসেবে কাজ করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

Share this article:

সর্বশেষ খবর