আজ, ৩১ অক্টোবর, মিরপুরের শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের শেষ ও তৃতীয় ম্যাচে মাঠে নেমেছে বাংলাদেশ। প্রথম দুটি ম্যাচে হেরে ইতিমধ্যেই সিরিজ খুইয়েছে টাইগাররা। তাই এই ম্যাচটি তাদের জন্য হোয়াইটওয়াশ এড়ানোর লড়াই, যা দলের আত্মবিশ্বাস ও সমর্থকদের প্রত্যাশার দিক থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ওয়েস্ট ইন্ডিজ যেখানে সিরিজ জয়ের আনন্দে ভাসছে, সেখানে বাংলাদেশ চাইছে অন্তত একটি জয় দিয়ে সম্মানজনকভাবে সিরিজ শেষ করতে।
এই ম্যাচে জয় তুলে নিতে পারলে তা আসন্ন আন্তর্জাতিক সূচির আগে দলের মনোবল বাড়াতে সাহায্য করবে। অন্যদিকে, ওয়েস্ট ইন্ডিজ চাইছে পূর্ণাঙ্গ জয় নিয়ে সিরিজ শেষ করে নিজেদের আধিপত্য বজায় রাখতে। তাই দুই দলের জন্যই এই ম্যাচটি কেবল আনুষ্ঠানিকতা নয়, বরং নিজেদের সামর্থ্য প্রমাণের এক কঠিন পরীক্ষা।
গুরুত্বপূর্ণ এই ম্যাচে টস জিতে প্রথমে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বাংলাদেশের অধিনায়ক। লক্ষ্য ছিল উইকেটে বড় স্কোর গড়ে প্রতিপক্ষকে চাপে রাখা। তবে শুরুটা খুব একটা আশাব্যঞ্জক হয়নি টাইগারদের। পাওয়ার প্লেতে কিছুটা মন্থর গতিতে রান তোলার পর মিডল ওভারেও রান রেট খুব বেশি বাড়াতে পারেনি স্বাগতিকরা। প্রথম ১০ ওভার শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ ছিল ২ উইকেটে ৬৭ রান।
তানজিদ হাসান তামিম ব্যাট হাতে কিছুটা প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করলেও, ওয়েস্ট ইন্ডিজের বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ের সামনে খুব বেশি আগ্রাসী হতে পারেননি বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা। উইকেট ধরে রেখে শেষ দিকে ঝড় তোলার পরিকল্পনাই হয়তো ছিল দলের, কিন্তু দ্রুত উইকেট পতনে সেই পরিকল্পনাতেও কিছুটা বিঘ্ন ঘটে।
প্রথম ১০ ওভারে দুই উইকেট হারানোর পর বাংলাদেশের সামনে এখন বড় চ্যালেঞ্জ হলো একটি সম্মানজনক ও লড়াকু স্কোর দাঁড় করানো। উইকেটে সেট হয়ে যাওয়া ব্যাটসম্যানদের টিকে থাকা এবং দ্রুত রান তোলার প্রয়োজন। তানজিদ হাসান তামিম এক প্রান্ত আগলে রেখে ভালো খেলছিলেন, কিন্তু তাকে সঙ্গ দেওয়ার মতো একজন অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যানের অভাব অনুভূত হচ্ছিল। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বোলাররা নিয়মিত বিরতিতে উইকেট তুলে নিয়ে বাংলাদেশের রানের গতিতে লাগাম টানার চেষ্টা করছে।
মাঝের ওভারগুলোতে জুটি গড়ে দলের ইনিংসকে স্থিতিশীল করাই ছিল বাংলাদেশের প্রধান লক্ষ্য। এই মুহূর্তে দলের প্রয়োজন এমন কিছু ব্যাটসম্যানের যারা দ্রুত রান তোলার পাশাপাশি নিজেদের উইকেট ধরে রাখতে পারবে। শেষ ৫ ওভারে বড় শট খেলে স্কোরবোর্ডে অন্তত ১৫০-১৬০ রান যোগ করতে না পারলে ওয়েস্ট ইন্ডিজের শক্তিশালী ব্যাটিং লাইনআপের বিপক্ষে লড়াই করা কঠিন হবে।
সিরিজে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে থাকা ওয়েস্ট ইন্ডিজ এই ম্যাচটিও জিতে বাংলাদেশকে হোয়াইটওয়াশ করতে বদ্ধপরিকর। তাদের বোলাররা শুরু থেকেই নিয়ন্ত্রিত বোলিং করে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের চাপে রেখেছে। বিশেষ করে তাদের পেসাররা গতি ও বাউন্স দিয়ে বেশ ভুগিয়েছে টাইগারদের। ফিল্ডিংয়েও তারা বেশ চটপটে ছিল, যা তাদের আত্মবিশ্বাসের প্রতীক।
ব্যাট হাতেও ওয়েস্ট ইন্ডিজের রয়েছে শক্তিশালী লাইনআপ, যারা যেকোনো লক্ষ্য তাড়া করতে সক্ষম। তাই বাংলাদেশের বোলারদের জন্য এই ম্যাচে কঠিন পরীক্ষা অপেক্ষা করছে। সম্মানজনক স্কোর গড়ার পর বাংলাদেশের বোলারদের সেরাটা দিতে হবে যাতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটসম্যানদের দ্রুত প্যাভিলিয়নে ফেরানো যায় এবং হোয়াইটওয়াশ এড়ানো সম্ভব হয়।